শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এসময় অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন।আজ শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের আহসানুল্লাহ মুন্সীকান্দি ও বিলাসপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।আহতরা হলেন—মারুফ মাল (২৫), হাসান মুন্সি (৫০), সজীব খলিফা (২২), নাইম খা (১৯), সাকিব মাদবর (১৯), কামাল খা (১৯), বিজয় সরদার (১৯), রেজাউল ব্যাপারি (১৯), শহর আলী মাদবর (৫০), রিফাত খা (১৯), শুভ ব্যাপারী (১৯), ফাহিমা বেগম (৪০), ফাতেমা বেগম (৪৫), হাসান মুন্সী (৪৫), ইসাম মুন্সী (২০) ও রিনা বেগম (৫০)।
আহতদের বাড়ি বিলাসপুর ইউনিয়নে। তারা জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে মারুফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েপুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কুদ্দুস বেপারী ও বিলাসপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জলিল মাদবরের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে দুই পক্ষ। শনিবার সকালে ইউনিয়নের আহসানুল্লাহ মুন্সীকান্দি ও বিলাসপুর এলাকায় কথা কাটাকাটির জেরে উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এসময় শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এসময় দুই পক্ষের ১৬ জন আহত হন। এছাড়া দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে দুই পক্ষের সংঘর্ষ এবং হাতবোমা বিস্ফোরণের ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যায়, একটি খোলা মাঠে উভয়পক্ষের লোক মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। সেখানে অনেকের হাতে বালতি ও হেলমেট পরিহিত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। বালতি থেকে হাতবোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। পরে সেগুলো বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করছে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য কুদ্দুস বেপারী ও জলিল মাদবরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে নাম্বার দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বিলাসপুর গ্রামের জবেদ আলি হাওলাদার বলেন, ‘বিলাসপুর ইউনিয়নে বেপারী ও মাদবর পরিবারের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এখন আবার চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও জলিল মাদবরের গ্রুপের মধ্যে মাঝে-মধ্যেই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষই হাতবোমা ফাটায়। আজ সকালেও সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষ যে কবে থামবে জানি না। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
স্থানীয় সুমা আক্তার ও জোলে খাঁ জানান, সকালে শতাধিক লোকজন তাদের বাড়িতে ঢুকে হাতবোমা নিক্ষেপ করে। এসময় তাদের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। পরে ফসলি জমিতে দুই পক্ষ শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। তারা সবাই আতঙ্কে আছে।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আশিক মাহমুদ বলেন, ‘বিলাসপুর ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও স্থানীয় জলিল মাদবরের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালে জানতে পারি দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হচ্ছে। ককটেল বিস্ফোরণও ঘটাচ্ছে। বিলাসপুর ও আহসানুল্লাহ মুন্সী কান্দি এলাকায় তারা অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।’ছে।
Post a Comment