চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের সামনে যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম
চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের সামনে যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় তরমুজ লাল না হওয়ায় আবারো মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এবার পৌর শহরের টাউন ফুটবল মাঠের পাশে নিপুন সাহা (২৫) নামে এক আরেক তরমুজ বিক্রেতাকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সামনেই এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে টাউন মাঠের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
রক্তাক্ত অবস্থায় নিপুন সাহাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোর্শেদ আলম। আহত নিপুন সাহার বাবার নাম কৃষ্ণ সাহা। বর্তমানে তিনি পরিবারসহ টাউন মাঠের পাশে ভাড়া থাকেন। তিনি একজন তরমুজ বিক্রেতা। এর আগে, এ ঘটনার জেরে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের বড়বাজার এলাকার ফেরিঘাট রোডে তরমুজ বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম ও বৈদ্যুতিক মিস্ত্রী রুবেলকে দুজন এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এর মধ্যে আমিনুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বাবলু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ডিউটিরত অবস্থায় দেখতে পাই টাউন মাঠের সামনে একজনকে কোপাচ্ছে কয়েকজন যুবক। পরে তাদেরকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত যুবক জানিয়েছেন, জেবু ও তার সহযোগীরা তাকে কুপিয়েছে। তাদের বিস্তারিত নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
এদিকে, খোদ ডিউটিরত পুলিশের সামনেই নিপুন সাহাকে এলোপাতাড়ি কোপানোর ঘটনায় শহরজুড়ে থমথমে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত শুক্রবারের ঘটনার দিন আহত আমিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, শুক্রবার তরমুজ বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে ক্রেতার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। রাতে মোটরসাইকেলযোগে আমিও রুবেল ফেরিঘাট রোড হয়ে বড়বাজারে যাওয়ার পথে সেই ক্রেতাসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালাই। পরে দুজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তবে অভিযুক্তদের নাম-পরিচয় না জানলেও মুখ পরিচিত তারা।
গত শুক্রবারের ঘটনার দিন আহত রুবেল হোসেন বলেন, আমি মোটরসাইকেলের পেছনে বসেছিলাম। ওরা পেছন থেকে হামলা চালায়। আমি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গেলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এতে এ ঘটনার কিছুই আমি জানি না। আমিরুলের সঙ্গে ছিলাম এ জন্যে আমাকেও কুপিয়ে জখম করেছে তারা।
গত শুক্রবারের ঘটনার দিন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, দুজনের শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে রুবেলকে ভর্তি করা হয়েছে এবং আমিরুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী বা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতের ঘটনায় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোর্শেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ধারাল অস্ত্রের আঘাতে নিপুনের মাথায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সবশেষ ঘটনার সম্পর্কে জানতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে মুঠোফোনে বলেন, তরমুজ সাদা হওয়ায় বিক্রেতার সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয়। এর জের ধরে প্রথম দিন বিক্রেতাসহ দুজনকে কুপিয়ে জখম করে ক্রেতাপক্ষের কয়েকজন। আবার এরই জের ধরে পরদিন আরেক তরমুজ বিক্রেতা নিপুন সাহাকে কোপানো হয়েছে। রাতেই এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছিল। অভিযুক্তদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Post a Comment