সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সন্তান বিক্রি করলেন মা! পেলেন কত টাকা?
নিজের কোলের সন্তান বিক্রির অভিযোগ উঠেছে আশামনি খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর ওই নারীর দাবি, সন্তানের সুচিকিৎসা ও দুধ কিনতে না পেরে ১৪ দিনের নবজাতক শিশু খাদিজা খাতুনকে নগদ ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। শিশুটির সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। সাতক্ষীরার আশাশুনির কাদাকাটি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, আশামনির স্বামী কাদাকাটি গ্রামের সৈয়দ আলী সরদারের ছেলে শামীম হোসেন (২৮) পেশায় একজন ডিপ টিউবওয়েল মিস্ত্রী। তিনি এখন পর্যন্ত পাঁচটি বিয়ে করেছেন। আশামনি খাতুন শামীম হোসেনের চতুর্থ স্ত্রী। সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন তার স্বামী পঞ্চম বিয়ে করেছেন এবং সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর কর্মকারপাড়ায় তার পঞ্চম স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন। খবর পেয়ে সেখানে আসেন এবং স্বামীর সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়।
পরে আশামনি জানান, চলতি সালের জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে স্থানীয় কুল্যার মোড়ে একটা ক্লিনিকে তিনি দ্বিতীয় সন্তান প্রসব করেন। ক্লিনিকের খরচ, বাচ্চার ওষুধ ও দুধ কিনতে দিশেহারা হয়ে নিজের নবজাতক শিশু খাদিজাকে ১৪ দিন বয়সে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে আশাশুনি তেঁতুলিয়া গ্রামের চা বিক্রেতা নিঃসন্তান রবিউল-কাজল দাম্পতির কাছে নগদ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
আশামনি বলেন, ‘এ কাজ করেছি আমার সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। সে যে সুস্থভাবে বেঁচে থাকে।’ এ বিষয়ে আশামনির বাবা ভ্যানচালক আব্দুস সামাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল রিসিভ হয়নি।
শিশুটির ‘ক্রেতা; চা বিক্রেতা রবিউলের স্ত্রী কাজল বলেন, ‘আমরা দরদাম করে কয়েকজন সাক্ষীর সামনে শর্ত দিয়ে টাকার বিনিময়ে বাচ্চাকে কিনে নিয়েছি। বাচ্চার টিকা কার্ডে পিতা-মাতার নামের স্থানে আমার স্বামী ও আমার নাম দিয়েছি। জন্ম নিবন্ধন সনদে তার নাম রাখা হয়েছে ফারিয়া জান্নাতুল। সে আমাদের পরিচয়ে পরিচিত হবে।’
শামীম নিজেকে নির্দোষ দাবি করতে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে আশাশুনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পরে আর খোঁজখবর নেননি বলে নিজেই জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ সামছুল আরেফিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি চার দিন আগে আশাশুনি থানায় নতুন যোগদান করেছি। আমি বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানি না।’
পরে তিনি তার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আবার জানান, তিনিও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
Post a Comment