কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর চুল কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সেই সঙ্গে ঘরে থাকা টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুট করে নিয়েছে তারা। যাওয়ার সময় ঘরের জামাকাপড় জড়ো করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় ওই দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে আজ শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে নাঙ্গলকোট উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। মামলা রেকর্ড করে গতকাল রাতেই প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ করে একজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার মূল আসামি মো. ইমাম হোসেন (২৪) নাঙ্গলকোটেরই বাসিন্দা।
মামলায় ওই গৃহবধূ অভিযোগ করেন, তার স্বামী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি (৭০), কন্যাসন্তানসহ (২) বসবাস করেন ওই গৃহবধূ। তাদের সঙ্গে আসামি ইমাম হোসেনের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ইমামসহ তার লোকজন গৃহবধূ ও পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। ইমাম হোসেন আগেও বেশ কয়েকবার তাকে ধর্ষণের হুমকি দেন।
মামলায় বলা হয়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইমামসহ অজ্ঞাতনামা দুজন দেশীয় অস্ত্র, লোহার শিকল, তালা–চাবিসহ ওই গৃহবধূর বসতঘরের দরজা ভেঙে তার কক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় ইমাম হোসেন গৃহবধূর শিশুকন্যার জামা তার মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দেন এবং অপর আসামিদের সহযোগিতায় ওড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে ফেলেন। একপর্যায়ে লোহার শিকল দিয়ে গৃহবধূর হাত–পা বেঁধে তালা মেরে দেন তারা। এরপর ইমাম হোসেনের সহায়তায় মুখোশ পরা এক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করেন। পাশে থাকা অন্যজন গৃহবধূর মাথার চুল কেটে ফেলেন। তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের পর আসামিরা ঘরের স্টিলের আলমারিতে থাকা ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় দলিলপত্র নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তারা ঘরের জামাকাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় তার অসুস্থ শাশুড়ি টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তারা দ্রুত পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, ঘটনার সময় ইমাম হোসেনের মুখে জাহিদুল্লাহ নামটি শুনেছেন তিনি। মামলার অজ্ঞাতনামা আরেক আসামি ঘটনার সময় মুখোশ পরা ছিলেন। তিনি তাকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার মূল হোতা ইমাম হোসেনের পরিবারের সঙ্গে তার স্বামীর পরিবারের সম্পত্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পুরোনো বিরোধ আছে। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে ধারণা করছেন ভুক্তভোগী।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মূল আসামি ইমাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Post a Comment