দুপক্ষের সংঘর্ষে ইউএনওর বাবাসহ আহত ২০

 


শরীয়তপুরের সখিপুরে বিরোধপূর্ণ জায়গায় ঘর ভেঙে ফেলা নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাবা, ভাই ও এক আইনজীবী সহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।


আজ শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর সখিপুর মাধু সরকার কান্দি এলাকার দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 


আহতরা হলেন, উত্তর সখিপুর মাধু সরকার কান্দি এলাকার বাসিন্দা আমজাদ সরকার (৭০), মামুন সরকার (৩৫), মোয়াজ্জেম সরকার (৬০)। মেজবাহ উদ্দিন মোল্লা (৪২), স্বপন মোল্লা (৪৫), আনোয়ার হোসেন মোল্লা (৪৮), মহন মোল্লা (৬২), আইয়ুব মোল্লা (৩০), সোহেল মোল্লা (১৯), আবু কালাম মোল্লা (৪০), নুর হোসেন মোল্লা (২৯), অ্যাড. দেলোয়ার খান (৪০), স্বপন মোল্লা (৩০), হানিফা সরদার (৪০), রুহুল আমিন মোল্লা (৫৫), নবির হোসেন মোল্লা (৪০), আলিম উদ্দিন মোল্লা (৬০), খোকন সরদার (৬০), আক্তার হোসেন খান (৩৫), আহম্মদ হোসেন খান (৫৫)।


এদের মধ্যে আমজাদ সরকার খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আল-আমিনের পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উত্তর সখিপুর মাধু সরকার কান্দি এলাকার প্রবাসী রেজাউল মোল্লার সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই মনসুর মোল্লার সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। শনিবার সকালে বিরোধপূর্ণ জায়গায় রেজাউলের একটি টিনের ঘর ভেঙে ফেলেন মনসুর মোল্লা ও তার লোকজন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুপক্ষের লোকজন দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের ৯জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৪টি ঘর ভাঙচুর করে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। পরে সখিপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিনের মা জামসেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে একজন ইউএনও। আমার স্বামী মারামারির কথা শুনে বের হয়। পরে মনসুর মোল্লার লোকজন দুলাল ও নাসিররা আমার স্বামীকে ধাওয়া দেয়। তিনি একটি আশ্রয় নিলে সেই ঘর ভেঙে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাকে বাঁচাতে আমার ছোট ছেলে ও দেবর এগিয়ে আসলে তাদেরও কুপিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। আমার স্বামী এই ঝামেলার মিমাংসার কথা বলার তার ওপর এমন হামলা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।


প্রবাসী রেজাউল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, মনসুর মোল্লার সঙ্গে আমার জমি নিয়ে বিরোধ। আমার ১৬ শতাংশ জমি মনসুর মোল্লারা দখল করতে চায়। এ বিষয় নিয়ে আমাকে হুমকি ও মারধর করতে চায় মনসুর ও তাঁর লোকজন। এছাড়া আমার কাছে চাঁদাও দাবি করেন। তাই তাদের ভয়ে আমি অন্য এলাকায় বসবাস করি। কয়েকদিন আগে আমার জমিতে আমি একটি একচালা টিনের ঘর উঠিয়েছি। শনিবার সকালে মনসুর মোল্লা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচ্চু সরকারের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন নিয়ে আমার সেই একচালা টিনের ঘরটি ভেঙে ফেলে। বাঁধা দিতে গেলে আমাদের পক্ষের বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। পরে আমাদের চারটি ঘর ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে যায়। মনসুর ও ইউপি সদস্য বাচ্চুসহ হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছিতবে মনসুর মোল্লার পক্ষের লোক ও সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাচ্চু সরকার বলেন, আমরা চেয়েছিলাম যার যার জমি মেপে বুঝিয়ে দিতে। আজ সকালে জমি মাপতে গেলে রেজাউল মোল্লার লোকজন বাধা দেয়। এসময় মনসুর মোল্লা ও রেজাউল মোল্লার লোলজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় আমি দুপক্ষকে থামাতে চেষ্টা করি। আমি কোনো পক্ষে ছিলাম না।


জানতে চাইলে সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহতও হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এখন এলাকায় শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।।বাবা।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post