গ্রাম্য সালিশে হাজির না হওয়ায় বাবা-ছেলেকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা

 


গ্রাম্য সালিশে হাজির না হওয়ায় ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া পিতা-পুত্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে গ্রামবাসী। 

রোববার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।  


জানা যায়, সালিশ দরবারের শত শত মানুষ ওই অভিযুক্তের বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে তাদের নিজ ঘর থেকে বের করে বাবা আব্দুল গফুর (৪০) ও ছেলে মেহেদী হাসানকে (১৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর পাশের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন নামের অপর এক ব্যক্তির বাড়ি, দোকানপাট ও একটি মাজার ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামটি প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। যারা গ্রামে আছেন তারাও ভয়ে কোনো কিছু বলতে রাজি হননি। ঘটনার খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কাজী আখতারুল আলম।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নাওগাঁও গ্রামের বাসিন্দা হজরত আলীর ছেলে আব্দুল গফুর ও তার ছেলে মেহেদী হাসান। তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় মাদক বিক্রি ও চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে তাদের নিজের গোষ্ঠীর লোকজনও অতিষ্ঠ ছিল। এ নিয়ে কয়েক দিন যাবৎ গ্রামে সালিশ দরবার বসার কথা ছিল। রোববার দুপুরে অভিযুক্ত গফুরের বাড়ি-সংলগ্ন নাওগাঁও হোসেনীয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার সামনে গ্রামের শত শত মানুষ সালিশে বসে। সালিশে আ. গফুর ও মেহিদী হাসান উপস্থিত না হয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিল। এতে সালিশে আসা লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। পরে গ্রামের শত শত লোক অভিযুক্ত গফুরের বাড়িতে গেলে তিনি দা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আ. গফুর ও তার ছেলে মেহেদী হাসানকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর গ্রামের শত শত বাসিন্দা রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন অর রশিদ নামে অপর একজনের বাসা, দোকান ঘর ও একটি মাজার ভাঙচুর করেন।

নিহত আ. গফুরের স্ত্রী শিল্পি আক্তার বলেন, স্থানীয় হাবিবুর রহমানসহ শত শত মানুষ সালিশের নামে আমার স্বামী ও ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। 


আবেগজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে তিনি বলেন, স্বামী-সন্তান যত অপরাধই করে থাকুক দেশে আইন আছে, আইনের মাধ্যমে বিচার হতো। বাবা-ছেলেকে কেন নির্মমভাবে হত্যা করলো। তিনি হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন।


এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মো. রোকনুজ্জামান বলেন, শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিশ বসেছিল। সালিশে অভিযুক্ত ব্যক্তি না আসায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই বাড়ি গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন। 


Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post