গুমের পর কী ঘটেছিল সহ-সমন্বয়ক খালেদের সঙ্গে

 গুমের পর কী ঘটেছিল সহ-সমন্বয়ক খালেদের সঙ্গে



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী খালেদ হাসান চারদিন নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) সুস্থভাবে ফিরে এসেছেন। তার নিখোঁজ হওয়া এবং পরবর্তীতে ফিরে আসার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। খালেদ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে আপাতত কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না।


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত খালেদ। গত ২০ ডিসেম্বর নিখোঁজ হোন তিনি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। নিখোঁজ হওয়ার পর ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয় উদ্বেগ। শিক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে তার খোঁজ চাইতে থাকেন। এর পরেই পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে খুঁজে বের করার জন্য তৎপরতা শুরু করে। তবে চারদিনেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।


মঙ্গলবার রাত ১১টায় খালেদ তার হল ফিরে আসেন। কিন্তু তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তার কাছে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি তার নিখোঁজের ব্যাপারে। তার শারীরিক অবস্থা দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।



বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, খালেদ হাসানকে দেখতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন এবং দ্রুত সুস্থতার কামনা করেন। তবে, ক্যাম্পাসে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।



বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, তিনি খালেদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং জানাচ্ছেন যে, খালেদ প্রথমে রিকশায় টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বরের দিকে যাচ্ছিলেন, তখনই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফিরে পেয়ে তিনি নিজেকে সুনামগঞ্জে একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে দেখতে পান। এরপর তাকে কয়েক জায়গায় নেওয়া হয় এবং শেষ পর্যন্ত তিনি বরিশালে এক রাস্তায় পড়ে থাকেন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা আনা হয়।ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, খালেদকে গুম করা হতে পারে, তবে পুরো বিষয়টি এখনও রহস্যজনক। তারা দাবি করেছেন যে, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত এবং প্রকৃত ঘটনা সবার সামনে আনা উচিত।


এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য জানানো হয়নি। তবে, খালেদ সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।



বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন, খালেদ শঙ্কামুক্ত হলেও শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নয়। তার স্মৃতি বিভ্রাটের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা তার চিকিৎসা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করবেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post