আওয়ামী লী*গের শীর্ষ নেতারা নির্বা*চনে আজীবন নি*ষিদ্ধ হতে পারেন
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে। এর মধ্যে গত শুক্রবার রাতে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার গণমাধ্যমে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠান।
সেখানে ইঙ্গিত মিলেছে, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের প্রথম শ্রেণির নেতারা নির্বাচনে আজীবন নিষিদ্ধ হতে পারেন। ভোটার তালিকা থেকেও বাদ পড়তে পারেন তাঁরা। একই পরিণতি ঘটতে পারে আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতাদের ক্ষেত্রেওবৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ব্যাপক প্রাণহানি, অনেকের পঙ্গুত্ব, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে গুমসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এবং সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান থেকেও আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্ভাব্য এই পরিণতির পক্ষে যুক্তি আছে।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না—প্রশ্নে গত বৃহস্পতিবার রংপুরে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছিলেন, ‘তাদের জন্য কোনো বাধা সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি দেখছি না।’ পরে ওই দিন রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যম তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। এতে তিনি বলেন, ‘এটি কারো অজানা নয় যে আইসিটি (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) আইনে এরই মধ্যে অনেক মামলা রজু হয়েছে শেখ হাসিনাসহ অনেক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। হত্যা মামলাও করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচন কার্যক্রম নির্ভর করবে এসব মামলা সুরাহার ওপর।
আরও পড়ুনঃ আমেরিকায় বসে তুমি বেশি বুইঝো না, সোহেল তাজকে শেখ হাসিনা
নির্বাচন কর্মকর্তারাও বলছেন, ‘আইসিটি আইনে কারো সাজা হলে তিনি আজীবন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। ভোটার তালিকা থেকেও বাদ পড়বেন। আইসিটি প্রসিকিউটরদের বক্তব্য, নিউক্লিয়াস এবং সুপ্রিম কমান্ডারদের ব্যাপারে আমরা এখন উদ্যোগী, মনোযোগী। তাঁদের বিচারটাই আগে হবে।’জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর ১২ অনুচ্ছেদে যেসব কারণে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া যাবে না, তা বলা আছে। এই অনুচ্ছেদের (ণ) উপ-অনুচ্ছেদে বলা আছে, কেউ আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের অধীনে কোনো অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হলে তিনি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে সংসদ নির্বাচনের যোগ্যতা-অযোগ্যতা সম্পর্কে এই অনুচ্ছেদের (ঙ) উপ-অনুচ্ছেদে একই কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বাবার দেড় কোটি টাকা চুরি করে তুলে দিলেন স্বামীর হাতে!
এ ছাড়া ভোটার তালিকা আইন, ১৩(ঘ) ধারায় ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তন সম্পর্কে বলা হয়েছে, কেউ আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের অধীনে কোনো অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হলে ভোটার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ পড়বে। আবার ভোটার না হলে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না।
আরও যেসব কারণে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া যাবে না, তার মধ্যে রয়েছে নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে কেউ অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে থাকলে তাঁর মুক্তিলাভের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদেও এটি উল্লেখ আছে।
আরও পড়ুনঃ বিশাল সুখবর পেলেন নুরুল হক নুর
এ ছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২(ঘ) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ৭৩, ৭৪, ৭৮, ৭৯, ৮০, ৮১, ৮২, ৮৩, ৮৪ ও ৮৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত নির্বাচনী অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে থাকলে তাঁর মুক্তিলাভের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে।
নির্বাচন কর্মকর্তাদের মতে, নির্বাচনী ও ফৌজদারি অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে ওই দণ্ডিত ব্যক্তি একসময় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ফিরে পান। কিন্তু আইসিটি আইনে কেউ অপরাধী সাব্যস্ত হলে ‘সময় অতিবাহিত’ হওয়ার সুযোগ তাঁর জন্য প্রযোজ্য নয়।
Post a Comment