ড. মুহাম্মদ ইউনুসের শান্তিতে নোবেল পুনর্বিবেচনার দাবি
বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাম্বলম্বীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ তুলে শিমলায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভে নেমেছে বিভিন্ন হিন্দু গোষ্ঠী। এ সময় ড. ইউনুসের নোবেল পুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয়েছে। ড. ইউনূস বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মানবাধিকার রক্ষক বা ডিফেন্ডার্স অব হিউম্যান রাইটস (ডিএইচআর)-এর ব্যানারে সামাজিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এই প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়।ডিএইচআর-এর আহ্বায়ক অজয় শ্রীবাস্তব বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তি বাহিনী ও শেখ মুজিবুর রহমানকে সমর্থন করা হিন্দুরাই এখন দেশটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। শ্রীবাস্তব ইউনুসের বিরুদ্ধে ‘জেহাদি মানসিকতা’ থাকার অভিযোগ তোলেন এবং হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার জন্য তাকে দায়ী করেন।
আরও পড়ুনঃ ডিবি হারুন ধরতে উত্তরা বাড়ি ঘেরাও, অতঃপর
বিক্ষোভকারীদের দাবি, গত ৮ আগস্ট ড. ইউনুস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই হিন্দু ও তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ের ওপর হামলার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন নৃশংসতা রোধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, এমন নিপীড়ন এবং গণহত্যা এখনো চলছে।ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবিও জানান শ্রীবাস্তব। একই সঙ্গে তিনি ২০০৬ সালে ইউনুসকে দেয়া নোবেল শান্তি পুরস্কার পুনর্বিবেচনার জন্য নোবেল কমিটির প্রতি আহ্বান জানান। তার অভিযোগ, ইউনুসই এই আক্রমণগুলোর মূল পরিকল্পনাকারী এবং এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
এসময় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার যেন হিন্দুদের ওপর সহিংসতা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
আরও পড়ুনঃ নাহিদ ইসলামসহ তিন সমন্বয়ক ডিবিতে
এই প্রতিবাদের মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায় এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করতে চায়। শিমলায় এই প্রতিবাদ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে একটি বৃহত্তর উদ্বেগ প্রকাশ করে। এটি এই অভিযোগগুলি মোকাবিলার জন্য সংলাপ এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। বিক্ষোভকারীরা আশা করছেন, তাদের প্রচেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের জন্য ন্যায়বিচার এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
এর আগে, নভেম্বরের শেষ দিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান পরামর্শদাতার (ড. মুহাম্মদ) শান্তিতে নোবেল কেড়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তমলুকের বিজেপির আইনপ্রণেতা সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অনেকটা হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘উনি যে অন্তর্বতী সরকারের মাথা হয়ে বসেছেন, তারা কিছুই করছে না। উনি তো শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন। কিন্তু এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যে অশান্তি চলছে, আমি নোবেল কমিটিকে বলতে চাই, উনার পুরস্কার এখনই কেড়ে নেয়া হোক।’ যদিও নোবেল কমিটির এমন কোনও নিয়ম আছে কিনা, সে বিষয় অবগত নয় বলেও জানিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে, ভারতের হিন্দুত্ববাদী এবং ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের ড. ইউনূস এবং তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে এ ধরনের দাবিকে অবান্তর মনে করেন বাংলাদেশের অনেকেই। তারা মনে করেন, বিজেপি নেতাদের এই ধরনের আগ্রাসী মন্তব্য দুই দেশের সম্পর্ককে আরো বেশি তিক্ততার পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
Post a Comment